সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনি কি ঈশ্বরের ওপর আস্থা রাখবেন?

আপনি কি ঈশ্বরের ওপর আস্থা রাখবেন?

কল্পনা করুন, আপনার এমন একজন বন্ধু আছেন, যার আপনি উচ্চপ্রশংসা করেন অথচ তিনি এমন কিছু করেন, যা আপনি বুঝতে পারেন না। অন্যেরা তার কাজ ও উদ্দেশ্যগুলো নিয়ে সমালোচনা করে ও বলে, আপনার বন্ধু নিষ্ঠুর। আপনি কি তৎক্ষণাৎ তাদের সঙ্গে একমত হবেন নাকি আপনি আপনার বন্ধুর কাছ থেকে বিষয়টা শোনার জন্য অপেক্ষা করবেন? বিষয়টা ব্যাখ্যা করার জন্য যদি তিনি নিজে উপস্থিত না থাকেন, তাহলে আপনি কি সঙ্গে সঙ্গে তার বিচার করার পরিবর্তে ধৈর্য ধরবেন?

উত্তর দেওয়ার আগে, আপনি হয়তো আরও কিছু জানতে চাইবেন। আপনি হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারেন, ‘এই বন্ধুকে আমি সত্যিই কতটা ভালো করে জানি আর তার প্রশংসা করার কোন কারণ আমার রয়েছে?’ অনেকটাই জানি। কিন্তু এই বিষয়টা বিবেচনা করুন: ঈশ্বর নিষ্ঠুর কি না, সেই সম্বন্ধে এই প্রশ্নের ক্ষেত্রে আমরা কি একই নীতিগুলো প্রয়োগ করতে পারি না?

ঈশ্বর যা করেছেন, তার কিছু বিষয় হয়তো আপনার পক্ষে বোঝা কঠিন হতে পারে অথবা তিনি যা ঘটতে দিয়েছেন, তা দেখে আপনি হয়তো অবাক হতে পারেন। এমন অনেক লোক রয়েছে যারা আপনাকে বলবে যে, ঈশ্বর নিষ্ঠুর আর তারা আপনাকে তাদের মতোই, ঈশ্বরের উদ্দেশ্য নিয়ে বিচার করার জন্য জোরালো পরামর্শ দেবে। তাঁকে না জানা পর্যন্ত, আপনি কি সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিচার করবেন? আপনি ঈশ্বরকে কতটা ভালোভাবে জানেন, সেটার ওপরই হয়তো উত্তরটা নির্ভর করছে। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘ঈশ্বর আমার কাছে কী ধরনের এক বন্ধু?’

আপনার জীবনে যদি সমস্যা থাকে, তাহলে আপনি হয়তো একথা বলতে প্ররোচিত হবেন যে, ঈশ্বর আদৌ একজন বন্ধু নন। কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখুন। আপনার জীবনে দুঃখকষ্টগুলোর পিছনে নাকি আশীর্বাদগুলোর পিছনে ঈশ্বরের হাত রয়েছে? আমরা যেমনটা দেখেছি, যিহোবা নন কিন্তু শয়তানই হল “এ জগতের অধিপতি।” (যোহন ১২:৩১) তাই এই জগতের বেশিরভাগ দুঃখকষ্ট ও অবিচারের পিছনে শয়তানই রয়েছে। আর আপনি কি এই বিষয়ে একমত হবেন না যে, আমাদের নিজ অসিদ্ধতা ও পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিগুলোও আমাদের অনেক সমস্যার কারণ?

আপনার জীবনে দুঃখকষ্টগুলোর পিছনে নাকি আশীর্বাদগুলোর পিছনে ঈশ্বরের হাত রয়েছে?

অন্যদিকে, কোন বিষয়টার পিছনে ঈশ্বরের হাত রয়েছে? বাইবেল যা বলে, তা বিবেচনা করুন: ঈশ্বর হলেন “আকাশ ও পৃথিবীর নির্ম্মাণকর্ত্তা”; তাঁর কাজগুলোর অন্তর্ভুক্ত হল আমাদের দেহ, যা “আশ্চর্য্যরূপে নির্ম্মিত”; আর যিহোবা হলেন ‘সেই ঈশ্বর আপনার নিঃশ্বাস যাঁহার হস্তগত।’ (গীতসংহিতা ১২৪:৮; ১৩৯:১৪; দানিয়েল ৫:২৩) এই সমস্ত কিছুর অর্থ কী?

এর অর্থ, আমাদের প্রতিটা শ্বাস-প্রশ্বাসের, আমাদের অস্তিত্বের জন্য আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তার কাছে ঋণী। (প্রেরিত ১৭:২৮) এর অর্থ, জীবনের দান, আমাদের চারপাশে থাকা এই জগতের সৌন্দর্য, প্রেম ও বন্ধুত্বের আনন্দ আর স্বাদ গ্রহণ করার, স্পর্শ করার, শ্রবণ করার এবং আঘ্রান নেওয়ার আনন্দ—সমস্ত কিছুই ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া দান। (যাকোব ১:১৭) আপনি কি এই বিষয়ে একমত হবেন না যে, এই আশীর্বাদগুলো তাঁকে এমন একজন বন্ধু করে তোলে, যিনি আমাদের প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য ও যাঁর ওপর আমরা আস্থা রাখতে পারি?

এটা ঠিক যে, আপনি হয়তো ঈশ্বরের ওপর আস্থা রাখাকে কঠিন বলে মনে করতে পারেন। সম্ভবত আপনি হয়তো মনে করেন, আপনি এখনও তাঁকে এতটা ভালোভাবে জানেন না যে, আপনি তাঁর ওপর আস্থা রাখতে পারেন। আর তা ঠিকই। কেন কেউ কেউ ঈশ্বরকে নিষ্ঠুর বলে বিচার করে থাকে, তার সমস্ত কারণ আমরা এই সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধগুলোতে উল্লেখ করতে পারছি না। কিন্তু ঈশ্বরকে আরও ভালোভাবে জানার জন্য প্রচেষ্টা করা কি উত্তম হবে না? * আপনি যখন তা করেন, তখন আমরা নিশ্চিত যে, আপনি ঈশ্বর সম্বন্ধে সত্য জানতে পারবেন। তিনি কি নিষ্ঠুর? একেবারে বিপরীত: “ঈশ্বর প্রেম।”—১ যোহন ৪:৮. ▪ (w১৩-E ০৫/০১)

^ উদাহরণস্বরূপ, কেন ঈশ্বর দুঃখকষ্ট থাকতে দিয়েছেন, সেই বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ১১ অধ্যায় দেখুন।