সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

শীঘ্রিই—সবার জন্য ভাল স্বাস্থ্য!

শীঘ্রিই—সবার জন্য ভাল স্বাস্থ্য!

শীঘ্রিই—সবার জন্য ভাল স্বাস্থ্য!

জার্মান সংবাদপত্রিকা ফোকাস বলে, “কখনও অসুস্থ না হওয়ার ধারণাটা . . . সম্প্রতি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।” তবে এই ধারণাটা নতুন নয়। মানুষের জীবন যখন শুরু হয়েছিল, তখন সৃষ্টিকর্তা কখনোই চাননি যে, মানুষ অসুস্থ হোক। মানবজাতির জন্য তাঁর উদ্দেশ্য শুধু ‘বিশ্বের সকলের জন্য মোটামুটি ভাল স্বাস্থ্যই’ ছিল না। (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) আমাদের সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্য ছিল প্রত্যেকের নিখুঁত স্বাস্থ্য থাকবে!

তাহলে, কেন আমরা সবাই অসুখবিসুখ ও বিভিন্ন রোগে কষ্ট পাই? বাইবেল আমাদেরকে বলে যে যিহোবা ঈশ্বর সমস্ত মানবজাতির প্রথম বাবামা আদম ও হবাকে একেবারে সিদ্ধ করে সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁর সৃষ্টি কাজ শেষ করে, “ঈশ্বর আপনার নির্ম্মিত বস্তু সকলের প্রতি দৃষ্টি করিলেন, আর দেখ, সে সকলই অতি উত্তম।” আমাদের প্রেমময় স্রষ্টা কখনও চাননি যে মানুষের জীবন অসুখ ও মৃত্যুর দ্বারা জর্জরিত হোক। কিন্তু, আদম ও হবা যখন তাদের জন্য নির্দিষ্ট জীবনের পথকে অগ্রাহ্য করেছিল, তখন তারা পাপে পতিত হয়েছিল। আদমের পাপের পরিণতি হিসেবে সমস্ত মানুষের জন্য মৃত্যু এসেছিল।—আদিপুস্তক ১:৩১; রোমীয় ৫:১২.

তাই বলে যিহোবা মানবজাতিকে ছেড়ে দেননি। কিংবা মানুষ ও পৃথিবীর জন্য শুরুতেই তাঁর যে উদ্দেশ্য ছিল, তা-ও তিনি বাদ দেননি। বাধ্য মানবজাতিকে আবার তাদের ভাল স্বাস্থ্য ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরো বাইবেলে তিনি তাঁর উদ্দেশ্য জানিয়েছেন। ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্ট যখন পৃথিবীতে ছিলেন, তিনি অসুস্থদের সুস্থ করে ঈশ্বরের শক্তিকে দেখিয়েছিলেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অন্ধ, কুষ্ঠ, বধির, ফোলারোগ, মৃগীরোগ এবং পক্ষাঘাতী লোকেদেরকে যীশু সুস্থ করেছিলেন।—মথি ৪:২৩, ২৪; লূক ৫:১২, ১৩; ৭:২২; ১৪:১-৪; যোহন ৯:১-৭.

ঈশ্বর শীঘ্রিই তাঁর মশীহ রাজা যীশু খ্রীষ্টকে মানবজাতির জগতের বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করতে বলবেন। তাঁর শাসনাধীনে যিশাইয়ের এই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হবে: “নগরবাসী কেহ বলিবে না, আমি পীড়িত; তন্নিবাসী প্রজাদের অপরাধের ক্ষমা হইবে।” (যিশাইয় ৩৩:২৪) কিন্তু, কীভাবে তা হবে?

এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ভাববাদী সেই লোকেদের বিষয়ে লিখছেন যাদের “অপরাধের ক্ষমা হইবে।” তাই, অসুস্থতার মূল কারণ অর্থাৎ মানবজাতির উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া পাপ একেবারে মুছে যাবে। কীভাবে? যীশুর মুক্তির মূল্যের উপকারিতা বাধ্য মানবজাতির ওপর কাজে লাগানো হবে আর এর মাধ্যমে অসুস্থতা ও মৃত্যুর কারণগুলোও চলে যাবে। সারা পৃথিবীতে পরমদেশের মতো পরিবেশ হবে। খ্রীষ্টান প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন: “[ঈশ্বর] তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না; কারণ প্রথম বিষয় সকল লুপ্ত হইল।” সেটা শীঘ্রিই হবে!—প্রকাশিত বাক্য ২১:৩, ৪; মথি ২৪ অধ্যায়; ২ তীমথিয় ৩:১-৫.

ভারসাম্য বজায় রাখা

বর্তমানে, লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিরা বিভিন্ন রোগে বা অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই, এটা স্বাভাবিক যে লোকেরা নিজেদের স্বাস্থ্য ও প্রিয়জনদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করেন।

আজকে চিকিৎসা পেশার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের প্রচেষ্টার প্রতি খ্রীষ্টানরা অনেক উপলব্ধি দেখান। সুস্থ থাকার জন্য যুক্তিসংগত পদক্ষেপগুলোও তারা নিয়ে থাকেন। কিন্তু, রোগমুক্ত ভবিষ্যতের বিষয়ে বাইবেলের প্রতিজ্ঞা আমাদেরকে এই ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সহজ কথায় বললে, যতক্ষণ পর্যন্ত না মশীহ রাজা মানবজাতির বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত নিখুঁত স্বাস্থ্য সম্ভব নয়। আমরা যেমন দেখেছি যে, এমনকি সবচেয়ে চমকপ্রদ আবিষ্কারগুলোও চিকিৎসাবিদ্যাকে গাছের আগায় যে রসালো আপেলটা ছিল সেটাকে নাগালের মধ্যে এনে দিতে পারেনি অর্থাৎ সবার জন্য ভাল স্বাস্থ্য এনে দিতে পারেনি।

শীঘ্রিই “বিশ্বের সকলের জন্য মোটামুটি ভাল স্বাস্থ্য” এনে দেওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে। তাই বলে রাষ্ট্রসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, পরিবেশসংক্রান্ত পরিকল্পনাকারী বা সামাজিক সংশোধক কিংবা চিকিৎসকরা তা এনে দিতে পারবেন না। ওই কাজটা কেবল যীশু খ্রীষ্টের জন্য রাখা হয়েছে। সমস্ত মানবজাতি যখন শেষ পর্যন্ত “ক্ষয়ের দাসত্ব হইতে মুক্ত হইয়া ঈশ্বরের সন্তানগণের প্রতাপের স্বাধীনতা পাইবে,” তখন তা কত আনন্দের বিষয়ই না হবে!—রোমীয় ৮:২১. (g০১ ৬/৮)

[১০ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

ঈশ্বরের নতুন জগতে সবার জন্য ভাল স্বাস্থ্য থাকবে