সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ঈশ্বরের রাজ্য কী সম্পাদন করবে?

ঈশ্বরের রাজ্য কী সম্পাদন করবে?

যিশু তাঁর শিষ্যদের ঈশ্বরের রাজ্য আসার জন্য প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন। তিনি জানতেন, পৃথিবীর উপর যা-কিছু ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে, সেগুলো আসলে ঈশ্বরের ইচ্ছা নয়। তিনি এও জানতেন, একমাত্র ঈশ্বরের রাজ্যই সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল, জগতের পরিস্থিতি ঠিক করার জন্য ঈশ্বরের রাজ্য কী সম্পাদন করবে?

ঈশ্বরের রাজ্য ইতিমধ্যে যা সম্পাদন করেছে

আগের প্রবন্ধে আমরা যিশুর দেওয়া কিছু চিহ্ন বিবেচনা করে দেখেছি। সেই চিহ্নগুলো স্পষ্ট প্রমাণ দেয় যে, ঈশ্বরের রাজ্য স্বর্গে স্থাপিত হয়ে গিয়েছে এবং যিশুই হলেন সেই রাজ্যের রাজা।

বাইবেল জানায় রাজা হওয়ার পর, যিশু সবচেয়ে প্রথমে শয়তান ও তার মন্দদূতদের স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করেন। তাই, এখন তাদের কার্যকলাপ পৃথিবীর মধ্যেই সীমিত হয়ে যায়। আর এটাই একটা কারণ যে, কেন ১৯১৪ সাল থেকে পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে।—প্রকাশিত বাক্য ১২:৭, ৯.

জগতের অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হওয়া সত্ত্বেও, ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা পৃথিবীব্যাপী লোকদের সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন কাজ করে চলেছেন। সারা পৃথিবীতে বাইবেল থেকে শিক্ষা দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে, যেটার বিষয়ে যিশু ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন আর অনেকে বাইবেল সম্বন্ধে শিখছে এবং দৈনন্দিন জীবনে এটির নীতিগুলো কাজে লাগাচ্ছে। (যিশাইয় ২:২-৪) লক্ষ লক্ষ লোক তাদের পারিবারিক জীবনকে উন্নত করতে এবং চাকরি ও টাকাপয়সার ব্যাপারে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে পারছে, যাতে তারা এগুলোর দাস না হয়ে পড়ে। এই লোকেরা আজ নিজেদের জীবনকে উপকৃত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে ঈশ্বরের রাজ্যের অধীনে থাকার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে।

এরপর ঈশ্বরের রাজ্য কী সম্পাদন করবে?

যদিও যিশু স্বর্গে ইতিমধ্যে শাসন করতে শুরু করে দিয়েছেন, তবে এখনও পৃথিবীতে মানবসরকার শাসন করে যাচ্ছে। কিন্তু, ঈশ্বর যিশুকে নির্দেশনা দিয়েছেন: “তুমি আপন শত্রুদের মধ্যে কর্ত্তৃত্ব করিও।” (গীতসংহিতা ১১০:২) শীঘ্রই যিশু সমস্ত বিরোধীদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেবেন এবং যারা স্বেচ্ছায় ঈশ্বরের বাধ্য হয়, তাদের সমস্ত সমস্যা থেকে স্বস্তি প্রদান করবেন।

শীঘ্র ঈশ্বরের রাজ্য এই পদক্ষেপগুলো নেবে

  • মিথ্যা ধর্মকে ধ্বংস করবে। বাইবেলে মিথ্যা ধর্মকে এক বেশ্যার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে আর শীঘ্র এটাকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। যে-ধর্মগুলো ঈশ্বর সম্বন্ধে মিথ্যা শিখিয়েছে এবং লোকেদের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে, সেগুলোকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। আর এই বিষয়টা অনেক ব্যক্তিকে অবাক করে দেবে। —প্রকাশিত বাক্য ১৭:১৫, ১৬.

  • মানবশাসনের শেষ নিয়ে আসবে। ঈশ্বরের রাজ্য সমস্ত মানবশাসনের শেষ নিয়ে আসার জন্য পদক্ষেপ নেবে।—প্রকাশিত বাক্য ১৯:১৫, ১৭, ১৮.

  • দুষ্ট লোকেদের দূর করে দেবে। সেই লোকেদের সম্বন্ধে কী বলা যায়, যারা মন্দ কাজ করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ এবং ঈশ্বরের বাধ্য হওয়াকে প্রত্যাখ্যান করে? “দুষ্টগণ দেশ হইতে উচ্ছিন্ন হইবে।”—হিতোপদেশ ২:২২.

  • শয়তান ও মন্দদূতদের ধ্বংস করে দেবে। শয়তান ও মন্দদূতেরা “জাতিবৃন্দকে আর ভ্রান্ত করিতে” পারবে না।—প্রকাশিত বাক্য ২০:৩, ১০.

যারা ঈশ্বরের রাজ্যকে সমর্থন করে, তাদের জন্য এই সমস্ত কিছুর অর্থ কী?

ঈশ্বরের রাজ্য মানবজাতির জন্য যা করবে

স্বর্গে রাজা হিসেবে শাসন করার সময় যিশু সেই সমস্ত কিছু করবেন, যেগুলো আজ পর্যন্ত কোনো মানবশাসক করতে পারেননি। যিশুকে সাহায্য করার জন্য মানবজাতির মধ্য থেকে ১,৪৪,০০০ জন সহশাসককে বাছাই করা হয়েছে। (প্রকাশিত বাক্য ৫:৯, ১০; ১৪:১, ৩) তিনি নিশ্চিত করবেন যেন পৃথিবীতে ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ হয়। ঈশ্বরের রাজ্য পৃথিবীতে বসবাসকারী লোকেদের জন্য কী করবে?

  • অসুস্থতা ও মৃত্যুকে দূর করবে। “নগরবাসী কেহ বলিবে না, আমি পীড়িত” এবং “মৃত্যু আর হইবে না।”—যিশাইয় ৩৩:২৪; প্রকাশিত বাক্য ২১:৪.

  • প্রকৃত শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে আসবে। “তোমার সন্তানদের পরম শান্তি হইবে” এবং “প্রত্যেকে আপন আপন দ্রাক্ষালতার ও আপন আপন ডুমুরবৃক্ষের তলে বসিবে; কেহ তাহাদিগকে ভয় দেখাইবে না।”—যিশাইয় ৫৪:১৩; মীখা ৪:৪.

  • অর্থপূর্ণ কাজ প্রদান করবে। “আমার মনোনীত লোকেরা দীর্ঘকাল আপন আপন হস্তের শ্রমফল ভোগ করিবে। তাহারা বৃথা পরিশ্রম করিবে না।”—যিশাইয় ৬৫:২২, ২৩.

  • পরিবেশগত সমস্যার সমাধান করবে। “প্রান্তর ও জলশূন্য স্থান আমোদ করিবে, মরুভূমি উল্লাসিত হইবে, গোলাপের ন্যায় উৎফুল্ল হইবে।”—যিশাইয় ৩৫:১.

  • চিরকাল বেঁচে থাকার জন্য লোকেদের কী করতে হবে, তা শেখাবে। “আর ইহাই অনন্ত জীবন যে, তাহারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে, এবং তুমি যাঁহাকে পাঠাইয়াছ, তাঁহাকে, যীশু খ্রীষ্টকে, জানিতে পায়।”—যোহন ১৭:৩.

ঈশ্বর চান যেন আপনি এই আশীর্বাদগুলো উপভোগ করেন। (যিশাইয় ৪৮:১৮) পরবর্তী প্রবন্ধে ব্যাখ্যা করা হবে, আপনাকে এখনই কী করতে হবে, যাতে আপনি এই অপূর্ব ভবিষ্যৎ লাভ করতে পারেন।